Friday, May 20, 2016

জন্মান্তরবাদ (৭-৮)

পর্ব-০৭
________________
জন্মদিনে মৃত্যুর কথা স্বরন করাই প্রতিটি মানু্ষের মুখ্য কর্ম। জন্ম নিয়ে অমর হওয়ার কর্ম করার জন্যই মানুষের জন্ম। আর অমর হওয়ার কর্মের দ্বারা জন্ম মৃত্যুকে বারণ করে 'নির্বাণ' লাভই হল প্রকৃত মানুষের উদ্দেশ্য। কত শত লক্ষ যোনী ভ্রমনের পর আমরা এই মানব জনম পেয়েছি, তার হিসাব আমাদের কাছে নেই। তাই এই জন্মকেই শেষ জন্ম-মৃত্যু করার লক্ষে আমাদের কর্ম করতে হবে।
জন্ম সেই নেয়, যার পূর্ব জন্মের বাসনা ফুরায় না। মূলত বাসনা থাকতে জীবের আসা-যাওয়া বারণ হবে না। তাই নির্বাণ লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয়টি হল বাসনা পরিত্যাগ করা। পাপ এবং পূন্য কর্মের ফলাফল ভোগ করার জন্যই মানুষের বারবার জন্মগ্রহন করতে হয় (জনম নিলে তার মৃত্যু অনিবার্য)।যাকে জন্মান্তর্বাদ বলা হয়।
বাসনা পূরন করার জন্য আমাকে বারবার নয় বাতন ঘুরে এই পৃথিবীতে আসতে হয়েছে দীর্ঘ্য ৯ মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভ নামক কবর বা গুর আযাব ভোগ করে। যাকে যঠরের যন্ত্রনা বলা হয় সনাতন বা হিন্দু ধর্মে। প্রতিটি মানুষকেই গুর আযাব ভোগ করতে হয়, হোক সে ওলী আওলিয়া বা নবী রাসূল বা কোনো অবতার। গুর আযাব (যঠরের যন্ত্রনা) কারো জন্য মাফ নাই।
মানুষের কর্ম ৪ প্রকার (পাঁচ প্রকার)। যথাঃ সঞ্চিত, প্রারদ্ধ, নিত্য, আগামী, (পতিসিদ্ধ)।
‪#‎সঞ্চিত‬ কর্মঃ পূর্ব জন্মের কর্ম।
‪#‎প্রারদ্ধঃ‬ পূর্বের কর্ম এই জন্মে প্রারদ্ধ হয়ে আমাদের সাথে এসেছে। যে কর্মের ফল আমরা ভোগ করছি।
‪#‎নিত্য‬ কর্মঃ যে কর্ম আগামী জন্মের জন্য আমরা এখন যা যাযা করছি।
‪#‎আগামী‬ কর্মঃ নিত্য কর্মই আগামী জন্মে প্রারদ্ধ হয়ে আবার আমাদের সাথে যাবে, সেটাই আগামী কর্ম।
(পতিসিদ্ধঃ না জানলেও চলবে)
তাই আমাদের সবার উচিত সঞ্চিত কর্ম প্রারদ্ধ হয়ে আমাদের যে দুঃখ যাতনা দিচ্ছে, তা যেন আগামী জন্মে আর না ঘটে সেই জন্য নিত্য কর্মকে ভাল করতে হবে, যেন আগামী টা সুন্দর হয়।
আজকে আমি ২১ বছর বয়সে পদার্পণ করলাম। আর যারা আমার জন্মদিনে আমাকে wish করেছেন, তাদেরকে জানাই অন্তরের অন্তর স্থল থেকে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। আর যারা জানান নাই, তাদের জন্যও রইলো শুভকামনা। আপনাদের আগামী দিন গুলো সুখের হোক, সেই কামনা রইলো।
গতবার সম্ভাবত ২০০ জনের উপরে Wish করেছিল। কিন্তু এইবার আমি ইচ্ছা করেই আমার জন্ম তারিখ হাইড করে রাখছিলাম যাতে কেউ জানতে না পারে। সত্যি বলতে আমার লাইফে এমন কেউ নাই যেব্যক্তি আমার জন্মদিন মনে রেখে আমাকে উইশ করবে। তাই হাইড করে রাখছিলাম ফেইসবুক থেকে। কিন্তু এইবার Md Anwar Hossain ভাই আমাকে উইশ করছে আমার জন্ম তারিখ মনে রেখে। তারপর সেটা দেখে অনেকেই জানতে পারছে আজ আমার জন্মদিন। । এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের। কারন আমি এইরুপ পাওয়ার যোগ্য নই। তবুও আপনাদের মহৎ হৃদয়ের ভালবাসার কাছে আমি চির ঋণী। কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আসা ছিল না। তবে কিছু প্রিয় মানুষের অনুপস্থিতিতে একটু খালি খালি লাগতেছে।
তবে সত্যিই Md Anwar Hossain ভাইয়ের ভালবাসার কাছে চির ঋণী। জন্মদিন হাইড করে রাখা সার্থক আমার শুধু আপনার জন্য ভাই। আর তাহিয়া (মেঘ কন্যা) দোস্ত তর কাছেও কৃতজ্ঞ, অন্ততপক্ষে দুইজন মানুষ পেলাম যারা আমার জন্ম তারিখ ডাইরীতে লিখে রাখছে মনে রাখার জন্য। Rezwoan Ahmed ভাই তোমার গীটারের মিউজিক টা অসাধারণ ছিল, Thank u so much bro, Sumaiya Mumtaha তদের দুইজনের যৌথ উইশ সত্যিই অসম্ভব ভাল লাগছে, অসংখ্য ধন্যবাদ তোদের দুইজনকে।
আমি কখনো আমার জন্মদিনে পার্টি করি নাই। ভবিষ্যতে করবো বলেও মনে হয় না। আমি নিজের জন্য এরূপ অনুষ্ঠান পছন্দ করি না। তবে অন্যদের বার্থডে পার্টি আমার খুব ভাল লাগে। আমি অন্যদের সাহায্য ও উৎসাহও দিয়ে থাকি বটে।
দাঁড়ান, দাঁড়ান,, আরেক টা কথা,, নিচের ছবিটা আমার ছোট বেলার। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ২১ দিন। আমি সেই রাহাত।
 পর্ব-০৮
__________________
যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, "Every man is a born sinner" অর্থাৎ প্রতিটি মানুষই জন্ম থেকেই পাপী। কিন্তু একটি শিশু জন্মের আগে পাপের বুঝতই বা কি! আর পাপ করলোই বা কখন! নিঃসন্দেহে বাইবেলের এই লাইনটি জন্মান্তরবাদের ইঙ্গিত করে, কিন্তু মুসলিমদের মত খ্রীষ্টানরাও জন্মান্তরবাদ মানতে চায় না। কর্মবাদ ও কর্মের প্রকার গুলো বুঝলেই এই মস্যার সূক্ষ্ম সমাধান পাওয়া যাবে। ৭নং পর্বে কর্মের পপ্রকার উউল্লেখ ককরেছিলাম। আজ আর কর্মের প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কর্ম প্রধানত চার প্রকার, মোট পাঁচ প্রকার। চার প্রকার কর্ম হলোঃ ১.সঞ্চিত ২.প্রারব্ধ ৩.নিত্য ৪.আগামী। আর পঞ্চম প্রকারের নাম হলো প্রতিষিদ্ধ। 

১.সঞ্চিত কর্মঃ পূর্বের জন্মে মানুষ যে কর্ম করে তাকেই সঞ্চিত কর্ম বলে। অর্থাৎ বর্তমান জন্মে মানুষ সঞ্চিত কর্মেরই ফল ভোগ করে। সঞ্চিত কর্মের উপরই নির্ভর করে মানুষ কেমন স্তরে জন্মগ্রহন করবে। যদি ভাল কর্ম করে তবে ভাল স্তরে, আর যদি খারাপ কর্ম করে তবে খারাপ স্তরে জন্মগ্রহন করবে। পূর্বে জন্মে যে অনেক দান করবে সে ধনী পিতা-মাতার ঘরে জন্ম নিবে হবে, যে কৃপণতা করবে সে দরিদ্র‍্য পিতা-মাতার ঘরে জন্ম গ্রহন করবে। এখানে স্তর রয়েছে, কেউ রাজার ঘরে, কেউ জমিদারের ঘরে, কেউ উচ্চবিত্তের ঘরে, আবার কেউ একদম মিসকীন বা হত দরিদ্রের ঘরে, কেউ বা সামান্য দরিদ্র‍্যের ঘরে, কেউ ভিক্ষারীর ঘরে কেউ বা মধ্যবিত্তের ঘরে জন্মগ্রহন করে। কেউ বা আবার মানব কূল হারিয়ে পশু কূলে জন্মগ্রহন ককরে, যাকে বলা হয় ৮৪ এর ফের।তাই প্রতিটি মানুষই জন্ম থেকেই পাপী, যে ব্যাপারে বাইবেলের উক্তটি তুলে ধরেছিলাম উপরে।

২.প্রারব্ধ কর্মঃ সঞ্চিত কর্মকেই প্রাদব্ধ কর্ম বলা হয় বর্তমান জন্মে। অর্থাৎ আমরা যে কর্মেরফল ভোগ করে তাকেই প্রারব্ধ কর্ম বলে। অর্থাৎ সঞ্চিত কর্মই বর্তমান জন্মে প্রারব্ধ নাম ধারন করে। প্রারব্ধের ভোগ ভুগতে হবেই সে যত বড় মহামানব হোক। কর্ম কখনো পিছু ছাড়বে না। কুরআনের ভাষায় 'যা করবা তার বদলা পাইবা, এক সরিষার দানা পরিমান ছাড় দেওয়া হবে না"।

৩.নিত্য কর্মঃ আমরা বর্তমান জন্মে যেসব কাজ করতেছি সেটাই নিত্য কর্ম। আগামী জন্মে এই কর্মের নাম হয়ে যাবে সঞ্চিত কর্ম ও প্রারব্ধ কর্ম।

৪.আগামী কর্মঃ নিত্য কর্ম যে আমাদের সাথী হবে, যা আগামী জন্মে আমাদের ভোগ করতে হবে, তার নামই আগামী কর্ম। অর্থাৎ আমরা যা করছি বর্তমান জন্মে, তার মধ্যে যা গত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন, সেটাকেই এই জন্মে আগামী কর্ম বলা হয়। এই আগামী কর্মই আগামী জন্মে সঞ্চিত কর্ম নাম ধারন করবে।

৫.প্রতিষিদ্ধ কর্মঃ না বুঝলেই চলবে এটা। একটু জটিল। সাধরনত এটা আলোচনায় আসে না। আলোচনা করে পূর্বের গুলো গুলিয়ে যেতেন পারেন।

সুতরাং আমাদের সঞ্চিত কর্ম যা কিনা প্রারব্ধ হয়ে এসেছে আমাদের সাথে, তা আমাদের ভোগ করতেই হবে। তাই আমাদের উচিত নিত্য কর্মটাকে সুন্দর করা, যাতে আগামী কর্মটা ভাল হয়।

Sunday, May 15, 2016

জন্মান্তরবাদ (৫--৬)

পর্ব-০৫
_________________
জন্মান্তরবাদ নিয়ে সবার একই প্রশ্ন... যদি বার বার পৃথিবীতে আসা যাওয়া করতে থাকি, তবে কি কিয়ামত হবে না? কবরের আযাব কি মিথ্যা? হাশর হবে না? পুলসিরাত হবে না? মিজানের পাল্লা হবে না? জান্নাত জাহান্নাম কি নেই?

কিয়ামত দ্বারা সবাই বুঝি এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হওয়াকে। কিন্তু এর হাকীকত কি? কিয়ামত এর হাকিকত হল.. মৃত্যুই কিয়ামত। এই দেহ হল বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড। যা আছে ব্রহ্মান্ডে তা আছে দেহভান্ডে। এই দেহেই রয়েছে চন্দ্র-সূর্য গ্রহ নক্ষত্র। এই দেহেই রয়েছে সাগর পাহাড়। এই দেহেই রয়েছে আরশ কুরসি লৌহ কলম।

কবর দ্বারা সাধারনত বুঝায় মানুষ মারা যাওয়ার পর যে গর্তে তাকে দাফন করা হয়ে, সেটাকেই। কিন্তু হাদিসে করবের আযাবের কথা বলা আছে সত্যি, তবে সেগুলো রূপক অর্থে। কারন অনেক মানুষ আছে, যাদের দাফন করা হয় না। তাহলে তাদের কবরের আযাব কিভাবে হবে? অথচ আল্লাহর রাসূল (স) এর হাদিস থেকে জানা যায় যে, সবারই কবরের আযাব হবে অথবা জান্নাতের বাগান হবে কবর। তবে ত হাদিস মিথ্যা হয়ে যায়। মূলত কবর হলো মাতৃগর্ভ। যেটা অনেক আগেই উল্লেখ করেছি। সবাইকে এই করব বা আলমে বারজাখ অতিক্রম করেই হাসরে উঠতে হবে।

হাসরের মাঠ দ্বারা বুঝায় পরিমানের মাঠ। হাসর মানেই পরিনাম। পৃথিবীই হাসরের মাঠ। আমরা সবাই এখন পরিনামের মাঠেই আছি। পূর্বের জন্মের কর্মফল পাচ্ছি সবাই। ভালর বিনিময়ে ভাল পাচ্ছি, খারাপের বিনিময়ে খারাপ প্রতিদান পাচ্ছি। তাই ত কেউ জন্ম থেকেই অন্ধ, নেংড়া, বোবা হয়, আর কেউ হয় সুদর্শন। কেউ রাজার ঘরে জন্ম নেয়, আর কেউ জন্ম নেয় ভিখারীর ঘরে। কেউ বা আবার পশুকূলে জন্মগ্রহন করে।

মিজান তথা দাঁড়িপাল্লা হল পাপ ও পূন্য পরিমাপের কুদরতী যন্ত্র। যেটার মাধ্যমে মানুষের কৃতকর্ম গুলো পরিমাপ করা হবে। পাপ ও পূন্য ধরা ছুয়া যায় না, এগুলো ত বস্তুই নয়। তবে দাঁড়িপাল্লায় পরিমাপের বিষয়টা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক। কিন্তু না! আল্লাহ অযৌক্তিক কিছু বলতেই পারেন না। মিজান এর হাকীকত হল মানুষের বিবেক। বিবেক মানুষকে পাপ ও পূন্যের পরিমাপ করে। এটা কম বেশি বিবেকবান মানুষ সবাই বুঝে। তাই একই কর্মের জন্য কেউ পাপী আবার কেউ পূন্যবান হতে পারে এই বিবেকের কারনে। যার বিবেক যেটাকে পাপ বলবে, সেটা তারজন্য পাপই, আর বিবেক যেটাকে পূন্য বলবে, সেটা পূন্য বা সওয়াব।

জান্নাত ও জাহান্নাম এই দুনিয়ার মাঝেই। তবে প্রকৃত জান্নাত মূলত একটাই। সেটা হল জান্নাতুল ফেরদাউস। যেটাকেই বলা হয় 'নির্বাণ লাভ' বা 'জন্ম-মৃত্যু বারন'। এবিষয় নিয়ে পরে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব।

 পর্ব-০৬

বৌদ্ধ ধর্মে নির্বাণ

_________________

বৌদ্ধ ধর্ম হচ্ছে সাধনের উপর নির্ভর করে বাসনা থেকে মুক্তির একটা ধর্ম। ইচ্ছেপোষণ করলাম সকল ধর্মের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে পুনুরুত্থান, জন্মান্তরবাদ এবং নির্বাণ সম্পর্কে লিখব যদিও রাহাত ভাই শুরু করেছেন তাই আমি অন্যদিকটাই তুলে ধরব আশা রাখছি। প্রথমেই বৌদ্ধ ধর্মে নির্বাণ সম্পর্কে লিখব।

মহামতি বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভ করার পরই বললেন --"হে গৃহকারক আমি তোমাকে জন্ম জন্মান্তর ধরে খুঁজছি কিন্তু তোমার সন্ধান পাইনি।আজ তোমার সন্ধান পেয়েছি। আমি তোমাকে ধ্বংস করেছি। আর তুমি দেহরুপ গৃহকে ধারণ করে আমাকে কষ্ট দিতে পারবেনা। "

বুদ্ধ সেদিন তৃষ্ণার নির্বাণ ঘটিয়েছিলেন। তাই তিনি আর জন্মগ্রহণ করবেন না বলেছিলেন।কর্ম বিমুক্তি হলে তৃষ্ণা বিমুক্তি হয় এবং জন্মনিরোধ হয়। জন্মনিরোধ হলে একত্রিশ লোকভূমির কোন ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেনা।জন্ম-মৃত্যু স্বাধীন হয়। দেহ অন্তর জ্বালা শেষ হয়। এটাই হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মের মূল কথা। তাই বলা হয়-নিব্বানং পরম সুখ।

এবার আসি একত্রিশ লোকভূমি কি :--

এক জন্মচক্রাবলে একত্রিশ লোকভূমি থাকে। লোক বলতে জগৎ বা স্থান (realm)।একত্রিশ লোকভূমিতে চার অপায়,একটি মনুষ্যলোক,ছয়টি স্বর্গলোক,ও বিশটি ব্রহ্মলোক। 

চার অপায় হচ্ছে --তীর্যক,অসুর,প্রেত ও নরক। 

তীর্যকলোক :--তীর্যক লোক বলতে মানুষব্যাতীত অন্যপ্রাণী বর্তমান আছে। বাকী তিন অপায়েই মানুষ আছে। এ তীর্যক লোকের আয়ু অনন্ত, অন্যান্য লোকের আয়ু নির্দিষ্ট। এখানে এক প্রাণী আরেক প্রাণীকে বধ করে বিধায় তীর্যক বৃদ্ধিপায়। 

গৌতম বুদ্ধের একটি উদাহরণ দিয়ে শেষ করছি --একটি কচ্ছপ সমুদ্রের নীচ থেকে একশ বছর পর পর সমুদ্রের নীচ থেকে উপরে উঠে একটি যোয়াল দেখতে পেলে যোয়ালের ছিদ্র দিয়ে মাথা ঢোকাতে চেষ্টা করে ঐ যোয়ালের ছিদ্র দিয়ে মাথা ঢোকাতে পারলেই সে কচ্ছপ কুল থেকে মুক্তি পেয়ে অন্য কুলে যেতে পারবে তবে আশা ক্ষীণ।যারা সবসময় রাগ দেখায় ওরা সাপ কুল থেকে জন্মগ্রহণকারী। সকল মানুষ সর্বদা অলসভাবে ঘুমিয়ে কাটায় তারা সরিসৃপ জাতি প্রাণী থেকে মুক্তি পেয়ে মনুষ্যলোকে জন্মগ্রহণ করেছে।এ রকম অসংখ্য উদাহরণ দেয়া যাবে।আর কোন আত্মা যখন মানুষ রুপে আসে যে কুল থেকে আসে সে কুলের স্বভাব কিছুটা হলেও দেখা যায়। 

কয়েকটি তীর্যক প্রাণী :-বানর, বাঘ, ভাল্লুক, সিংহ, হায়না , মাছ ,কুমীর ইত্যাদি। তবে তীর্যক লোক এতটুকুই জানা যথেষ্ট। 

২) অসুর লোক:-যারা পৃথিবীতে সব সময় মারামারি-কাটাকাটি, সন্ত্রাস এবং শক্তি প্রয়োগ করে বেড়ায় তারা অসুর লোক উৎপন্ন করে বা জন্মনেয় সেথা। এখানে একে অপরের আঘাত দ্বারা অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করে। হাত-পা,মাথা কাটা যাওয়ার পর আবার জোড়া লাগে সেখানে। নির্দিষ্ট সময় না হওয়া পর্যন্ত মরেনা। নির্দিষ্ট সময় হলে পরে অসুরলোক চ্যুত হয়ে নানা যোনী বা লোকে উৎপন্ন হয়। এরাই দুনিয়ায় সন্ত্রাসী ও ঝগড়াটে লোক।

৩) প্রেত লোক :-প্রেতরা সর্বদা ক্ষুধার জ্বালায় জ্বলতে থাকে। পোশাক পরিচ্ছদ নোংরা থাকে নর্দমায় এরা পরে থাকে।ইহ জীবনে যারা খাই খাই স্বভাবের, কৃপন,খাবারের প্রতি লোভ, হিংসা,ধর্মীয় এবং শিক্ষাখাতের টাকা আত্মসাৎ করে, দানীয় বস্তু ভোগ করে এরাই প্রেত লোকে উৎপন্ন হয়। যারা মৃত্যুর সময় চর্মসার, কঙ্কাল, ও ক্ষুধার্ত প্রাণীর দৃশ্য বা তালোয়ার দেখে তারা ২২টি প্রেতলোকে কর্ম অনুযায়ী উৎপন্ন হয়।

৪) নরক :- নরক দু:খ যন্ত্রণাদায়ক ও কষ্টকর। আটটি মহানরক আছে। লেখার কলবর বড় হওয়াতে সংক্ষেপে লেখা । প্রত্যেক মহানরকের চারটা কোণ ও দরজা রয়েছে। লোহা দ্বারা নির্মিত। দাউ দাউ করে জ্বলছে। নরকে কোন কোন নারকীদের দেহ ৩ মাইল ৩২০ গজের কম বেশীও আছে।

যারা ব্যাভিচারী,প্রতারক ও কর্কশভাষী, ঘুষ খোর, শিকারী, জীবিত প্রাণী দগ্ধ করে,নেশা করে, অপরকে কষ্ট দেয়,ওজনে কম দেয়,চুরি করে, মিথ্যাবাদী, পুর্ণজন্মে বিশ্বাস করেনা, অন্যের জমি ভোগ করে তারাই নরকবাসী।

৫) ব্রহ্মলোক :-ব্রহ্মলোক ২০ টি। স্বর্গলোকের উপর ব্রহ্মলোক অবস্থিত।যারা ধ্যানী তারা এ লোকে উৎপন্ন হন। এখানে অধ্যানী উৎপন্ন হয়না। কারন ব্রহ্মলোক কাম লোক নয়। কামলোক হচ্ছে স্বর্গ হতে নীচের ভূমিগুলো। ধ্যানের কতগুলো ধাপ আছে বিতর্ক,বিচার,প্রীতি,সুখ ও একাগ্রতা। ধ্যানীরা এই চারটি ধাপ এবং বিদর্শণ ধ্যানের মাধ্যমে যারা অনুগামী ফল লাভ করেন তারা ব্রহ্মলোকে জন্মগ্রহণ করেন। কেউ ৫ বার কেউ ৭ বার।

৬) স্বর্গলোক :-স্বর্গলোক মোট ৬টি। কোনটার আয়ুস্কাল ১২১ কোটি ৬০ লক্ষ বছর, কোনটা ২৩০ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আবার কোনটা ৫৭ কোটি ৬০ লক্ষ বছর। এ লোকে কর্ম অনুযায়ী আয়ুস্কাল প্রাপ্ত হয়। বোধি সত্ত্বা গন, তাদের পিতামাতা, মহাপূণ্যবানব্যাক্তি এ স্বর্গে উৎপন্ন হন। দেবতারাই এখানে অবস্থান করেন তবে তারা এখান থেকে সর্বলোকে স্বেচ্ছায় ভ্রমণ এবং জন্মগ্রহণ করেন।

৭) মনুষ্যলোক :--এটা বলার কিছুই নেই এখানে সবাই বর্তমান। যারা পূণ্যবান সত্ত্বা তারা এ ভূমিতে জন্মগ্রহণ করেন। সুদীর্ঘ সময় ধরে চারি অপায়ে পাপ ভোগের পরও এ ভূমিতে জন্মগ্রহণ করে।স্বর্গলোক আর ব্রহ্মলোকের আয়ু শেষ হলেও সত্ত্বগণ এ লোকে জন্মগ্রহণ করে।

নির্বাণ লাভের উপায়:-

-------------------------------

দু:খ নিবৃত্তি তথা জন্ম নিরোধে বৌদ্ধ ধর্মে প্রধান কাজ হচ্ছে প্রতিটি মানুষের শীলময় জীবন গঠন করা। শীল অর্থ চরিত্র। এটাই বৌদ্ধ ধর্মের মূল স্তম্ভ। কয়েক প্রকারের শীলের মধ্যে প্রধান হচ্ছে ---(১) পঞ্চশীল, (২)অষ্টাশীল (৩)দশশীল (৪)২২৭ শীল (৫)৫১০ শীল। এর মধ্যে পঞ্চশীল আর অষ্টাশীল হল গৃহবাসীদের জন্য।

পঞ্চশীল :-১)প্রানী হত্যা থেকে বিরত থাকা ২)চুরি করা থেকে বিরত থাকা ৩)ব্যাভিচার থেকে বিরত থাকা ৪)মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা ৫)নেশা থেকে বিরত থাকা।

অষ্টাশীল :--১) প্রানী হত্যা থেকে বিরত থাকা ২)পরদ্রব্য হরণ থেকে বিরত থাকা ৩)ব্রহ্মাচার্য পালন করা ৪) মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকা ৫)নেশা থেকে বিরত থাকা। ৬)বিকাল ভোজন (দিনের ১২টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত) হতে বিরত থাকা ৭) নাচ-গান বাদ্য দর্শণ ও শ্রবন সুগন্ধি বিলেপন হতে বিরত থাকা। ৮) উচ্চ শয়ন ও মহাশয়ন হতে বিরত থাকা।

আশাকরি বৌদ্ধ ধর্মের নির্বাণ সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দিতে পেরেছি।

লেখকঃ শ্রদ্ধেয় গুরুভাই Md Anwar Hossain

Tuesday, May 10, 2016

জন্মান্তরবাদ (পর্ব ১--৪ পর্যন্ত)

‬ পর্ব-০১
________
জন্মান্তরবাদ অর্থ হল এক জন্ম থেকে অন্য জনম। মৃত্যু বরনের পর আবার জন্ম গ্রহন করা, আবার জন্মের পর মৃত্যু বরন করা, এভাবে বারবার মৃত্যুর পর জন্ম এবং জন্মের পর মৃত্যু বরন করার উপর যে বিশ্বাস ও মতবাদ বা দর্শন রয়েছে, তাকেই জন্মান্তরবাদ বলে।

উল্লেখ্য যে, মৃত্যু হল স্থলদেহ ত্যাগ এবং জন্ম হলো নতুন দেহ গ্রহন। আত্মা অবিনশ্বর। মৃত্যু বলতে শুধুই দেহ থেকে আত্মা বের হয়ে যাওয়াকে বুঝায় এবং জন্ম বলতে সেই বের হয়ে যাওয়া আত্মা আবার নতুন কোনো স্থল দেহ ধারন করে পৃথিবীতে আগমন করাকে বুঝায়। আমরা যেমন দেহ থেকে কাপড় পাল্টাই, আত্মাও তেমন দেহ পাল্টায়। আমরা যেমন ছেঁড়া ও পুরাতন কাপড় ফেলে নতুন কাপড় পরিধান করি, আত্মাও তেমন জরাজীর্ণ দেহ ত্যাগ করে নতুন দেহ গ্রহন করে।

আত্মার এই আসা যাওয়ার কারন হল তার বাসনা ও কর্ম। বাসনা পূরন ও কর্মের ফল ভোগ করার জন্যেই জীব বার বার বিভিন্ন যোনীতে আসা যাওয়া করে। কর্ম ভালও হতে পারে আবার মন্দও হতে পারে। ভাল কর্মের জন্যেও জন্ম গ্রহন করতে হয়, আবার খারাপ কর্মের জন্যেও জন্ম গ্রহন করতে হয়।

খারাপ কর্মের ফল ভোগের জন্য জন্ম গ্রহনটা হয়তো সবাই বুঝে ও মেনে নেয়, কিন্তু ভাল কর্মের ফল ভোগের টা অনেকেইই মানতে চায় না। এর কারন হল জন্ম-মৃত্যু বারন হওয়া বা নির্বান লাভ করা। সবাই এটাই জানে যে ভাল কর্মের ফলেই নির্বান লাভ বা জন্ম-মৃত্যু বারন হয়ে মহামুক্তি লাভ হয়। এটা সত্য যে জন্ম-মৃত্যু বারন হয় উত্তম কর্মের দ্বারাই।

ভাল কর্মের ফল ভোগের জন্যেও কোনী জ্ঞানী জন্ম গ্রহন করার মত ইচ্ছা পোষণ করে না, কারন জঠর ব্যদনা খুব ভয়াবহ, যেটাকে গোড় আযাব বা কবরের আযাব বলা হয়। এই গোড় আযাব থেকে কেউ রক্ষা পায়নি, যাদের জন্মগ্রহন করতে হয়েছে। যেটা হল মাতৃগর্ভের নয় মাস দশ দিন। মাতৃ গর্ভটাই কবর। কেউ কেউ দেহকেই কবর বলেছেন, সেটা তাদের মত, আমাদের মতে মাতৃগর্ভই কবর। (আমি আমার মতের পক্ষে যুক্তি দিয়ে অন্যদের মতকে অবজ্ঞা করতে চাচ্ছি না। তবে যদি প্রয়োজন হয়েই পরে, তবে আগামী পর্বে পাঠকদের চাহিদার উপর বিবেচনা করে লিখব)। এই জঠর যন্ত্রনার জন্যেই কেউ ভাল কর্ম্ফল ভোগের জন্যেই জন্ম গ্রহন করতে চায় না। ভাল কর্মের জন্যে তখন জন্ম গ্রহন করতে হয়, যখন সেখানে বাসনা থাকে। যেমন কেউ ভাবল " আমি খাওয়াইলে আল্লাহ আমাকে উত্তম খাবার দিবে, আমি দান করলে আল্লাহ আমাকে অনেক ধনী বানাবে"। এরূপ ভাবার ফলে আল্লাহ সেই ব্যক্তির বাসনা পূরনের জন্যে তাকে আবার পৃথিবীতে পাঠাবে, তবে আগের চেয়ে উত্তমরূপে। এই বাসনাযুক্ত কর্মের জন্যে সে মূক্তি লাভ করবে না, তবে উন্নত জীবন লাভ করবে। তাই কেউ ধনীর ঘরে জন্ম গ্রহন করে, আবার কেউ গরীবের ঘরে। ভাল কর্ম তখনই মুক্তির কারন হবে যখন তা শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হবে। তাই শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে, বাসনা থাকিতে জীবের আসা-যাওয়া (জন্ম-মৃত্যু) বারণ হবে না।

‬ পর্ব-০২
________

এই পর্বে শুধু জন্মান্তরবাদের প্রমান দেওয়ার চেষ্টা করব কুরআন ও হাদিস থেকে। বাকী পর্ব গুলোতে শুধু জন্মার্বাদের আলোচনা থাকবে। আর কুরআন হাদিস ও বেদ গীতা থেকে উদ্ধিতি ও তার ব্যাখ্যা থাকবে। এই পোস্ট তাদের জন্য, যারা জন্মান্তরবাদ বিশ্বাস করে না ও যারা বিশ্বাস করে; কিন্তু বিশ্বাস দুর্বল।

আল্লাহ তায়ালা বলেন "কিরূপে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছ? অথচ তোমরা মৃত ছিলে, অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, পুনরায় তিনি তোমাদেরকে মৃত করবেন এবং পুনরায় তোমাদেরকে জীবিত করা হবে। তারপর তোমারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।" (Al-Baqara 2:28)

এই আয়াত নিয়ে একটু ভাবুন, আমরা মৃত ছিলাম (জন্মের আগের কথা, জীবত করা হল (জন্ম গ্রহন করলাম), আবার মৃত্যু বরন করব (মানে মরে যাবো), আবার জীবিত হবো (মানে হাসরে উঠবো)। আলেমরা এভাবেই ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেয় যে, আমরা মরা ছিলাম, এইবার জন্ম নিলাম, আবার হাসরে উঠবো। কাহিনী শেষ, জন্মান্তরবাদ বলতে কিছুই নেই। কিন্তু একটু লক্ষ করুন, শেষে আল্লাহ বললেন 'তারপর তোমারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।" প্রত্যাবর্তন অর্থ হল যেখান থেকে আসা, আবার সেখানেই ফিরে যাওয়া। মৃত্যুর পর জীবত হওয়া মানেই প্রত্যাবর্তন নয়। তাই আল্লাহ আগে জীবিত করার কথা বলেছেন, পরে প্রত্যাবর্তন করার কথা বলেছেন। অর্থাৎ আমাদের জীবত করার পর আবার আসতে হবে পৃথিবীতে। কারন আমরা পৃথিবীতেই ছিলাম। তা না হলে আল্লাহ 'প্রত্যাবর্তন' এর কথা উল্লেখ করতেন না।

অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন: (হে নবী) তুমি বলঃ তোমাদের (নিরূপিত) শরীকদের মধ্যে এমন কেহ আছে কি যে প্রথমবারও সৃষ্টি করে এবং পুনরাবর্তন করতে পারে? তুমি বলে দাওঃ আল্লাহই প্রথমবারও সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বারও সৃষ্টি করছেন বাবা বা, অতএব তোমরা (সত্য হতে) কোথায় ফিরে যাচ্ছ? (Yunus 10:34)

এই আয়াতে দেখা যায় যে, আল্লাহ বললেন তিনিই প্রথমে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই তা পুনরায় সৃষ্টি করছেন (চলমান) এবং করবেন। (আরবী ভাষায় বর্তমান কাল ও ভবিষ্যতকালের শব্দ একই)। অর্থাৎ আল্লাহ এখনও পুনরায় সৃষ্টি করছেন তার পুরনো ধ্বংস হওয়া সৃষ্টিকে। অর্থাৎ আল্লাহ এখনও মৃতদের জীবত করছেন। কিন্তু মোল্লারা ত বলে যে কিয়ামতের পর জীবিত করবেন এবং হাসরের মাঠে উঠাবেন। এখান থেকেও বুঝা থেকেও বুঝা মানুষের জন্ম ও মৃত্যু হচ্ছে বার বার। যা জন্ম থেকে জন্মান্তর পর্যন্ত চলতেছে।

এইবার অন্য একটি আয়াতের দিকে লক্ষ করুন। আল্লাহ বলেন "তিনিই মৃত হতে জীবন্তের এবং জীবন্ত হতে মৃতের আবির্ভাব ঘটান এবং ভূমির মৃত্যুর পর ওকে পুনরুজ্জীবিত করেন। এভাবেই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে। (Ar-Room 30:19)

এই আয়াতে আল্লাহ বললেন যে তিনি মৃত হতে জীবিত বের করেন এবং জীবিত হতে মৃতকে। এখান থেকেও বুঝা যায় যে জন্মান্তরবাদ সত্য। কারন আল্লাহ আগে এখানে মৃত্যের কথা বলছে, মৃত থেকে তিনি জীবত করেন। তিনি বলেন কি যে, অনস্তিত্ব থেকে তিনি জীবন বের করেন। যেন অন্য আয়াতে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলছেন যে, "তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন।" (Al-Ankaboot 29:19)। এই আয়াতে অনস্তিত্ব থেকে সৃষ্টির কথা বলে দিয়েছেন। কিন্তু উপরের আয়াতে আল্লাহ মৃতের থেকে জীবনকে বের করার কথা বলেছেন। মানে প্রানী মরার পর আবার জীবন লাভ করবে। আর মৃতকে অস্তিত্বহীন বলা যায় না। যেহেতু আল্লাহ এখানে অস্তিত্ব থেকে প্রান বের করার বা পুনরায় সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন, সেহেতু বলাই যায় যে প্রানীর মৃত্যুর পর জীবন ও জীবনের পর আবার মৃত্যু আছে।

অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন' (হে নবী) আপনি বলুনঃ তোমাদেরকে প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা তেমনিভাবে ফিরে আসবে। (Al-Araf 7:29)

এই আয়াত ত একদম স্পষ্ট প্রমান বহন করে যে জন্মান্তরবাদ মহাসত্য। কারন আল্লাহ বলেছেন আমাদের প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, সেভাবেই আল্লাহর নিকট ফিরে যাবো। এখানে আল্লাহ আদম (আ) এর সৃষ্টির কথা বলেননি, বলেছেন আমাদের সবার কথা, কারন আয়াতে আল্লাহ বহুবচন শব্দ ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ ত আমাদের মায়ের গর্ভে রেখে ধাপের ধাপে সৃষ্ট করেছেন তাঁর মহাকুদরতী পদ্ধতিতে। সুতরাং আমাদের প্রত্যাবর্তনও ঠিক এইভাবেই হবে, যেভাবে আমাদের জন্ম হয়েছে পৃথিবীতে। বিষয়টা খুবই সহজ। একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন।

এব্যপারে অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ “যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টি করেছি সেভাবেই আমি সেটার পুনরাবর্তন ঘটাব”। [সূরা আল-আম্বিয়া: ১০৪]

এই আয়াত থেকেও বুঝা যায় মাতৃগর্ভের মাধ্যমে আবারও জন্মগ্রহন করার কথা। আমাদের আল্লাহ উলঙ্গ করে সৃষ্টি করেছিলেন, আবারও শিশুর বেশে উলঙ্গ হয়েই জন্ম গ্রহন করতে হবে মৃত্যুর পর। এই বিষয়টা আরো পরিস্কার করে দিয়েছেন রাসূল (স)। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মহানবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, "কিয়ামতের দিন মানুষকে উলঙ্গ পদে, উলঙ্গ দেহে ও খাতনাহীন অবস্হায় কবর থেকে হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে ।" (বোখারী-মুসলিম ।)

উপরে বর্নিত আয়াত যে জন্মান্তরবাদের ব্যপারেই নাজিল হয়েছে, তার প্রমান স্বরুপ অন্য আরেক হাদিসে আছে, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, "কিয়ামতের দিন তোমরা উলঙ্গ পদে, উলঙ্গ দেহে ও খাতনাহীন অবস্হায় হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে।"একথা বলে তিনি কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেন, 'প্রথমবার সৃষ্টি করার সময় আমি যেরূপ সূচনা করেছি , দ্বিতীয়বারও আমি তাদেরকে অনুরূপভাবে সৃষ্টি করব।'

আল্লাহ মানুষকে তার কর্মের ফল দিবেন। আর তার ফল দেওয়ার জন্যে ত পৃথিবীতেই আসতে হবে এটাই স্বাভাবিক। কারন সূরা যিলযালে আল্লাহ বলেন 'তুমি যা করবা তার বদলা পাইয়া'। অর্থাৎ আমি কাউকে ভালবাসলে ভালবাসা পাবো, আর কাউকে আঘাত করলে আঘাত পাবো। ভালাবাসা পাওয়ার জন্যে ত আমাকেমাকে পৃথিবীতেই আসতে হবে, আর আঘাত পাওয়ার জন্যেও তাই। অবশ্যই থাপ্পরের বিনিময় থাপ্পরই হবে, থাপ্পরের বিনিময়ে আগুন জ্বালানোর কোনো যুক্তিকতাই নাই। আর আল্লাহ ত অবিচারক নন, উনি সর্বোত্তম বিচারক। অবশ্যই তিনি আমাদের থাপ্পরের বিনিময়ে আগুনে জ্বালানোর মত বেইনসাফী করবেন না। আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে বলেনঃ "তোমাদের সকলকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য; নিশ্চয়ই তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বার সৃষ্টি করবেন, যাতে এরূপ লোকদের যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে তাদেরকে ইনসাফ মত প্রতিফল প্রদান করেন; (Yunus 10:4)

আমাদের সাথে যা ঘটে, তা আমাদেরই কর্মের ফল, কিন্তু একটি শিশু জন্ম থেকেই তবে কেন প্রতিবন্ধি হয়!!! অবশ্যই স্রষ্টা অবিচারক ননন। অনেকেই বলে যে পরীক্ষার জন্য, কিন্তু পরীক্ষা ত সবার একই, তবে প্রশ্ন পত্র কেন ভিন্ন! একেকজনকে কেন একেকভাবে পরীক্ষা নিবেন!!! এটা কোন ধরনের ইনসাফ!!! এথেকেও বুঝা যায় জন্মান্তরবাদ সত্য এবং প্রভু নির্দোষ। উনি শুধু আমাদের কর্মের ফল প্রদান করেন ।যেমন আল্লাহ বলেনঃ 'তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তাতো তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল।' (Ash-Shura 42:30)

আবার কেন প্রানী পশু কূলে জন্ম গ্রহন করে মানুষ কেন মানব জনম হারিয়ে পশুকূলে যায়, সেটাও আল্লাহ কুরআনে স্পষ্ট ভাবেই বলে দিয়েছেন সূরা ত্বীনের মধ্যে। আল্লাহ বলেন : "অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে। তারপর আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি হীনদের হীনতম রূপে। তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সুতরাং এরপরও কিসে তোমাকে কর্মফল সম্পকের্ অবিশ্বাসী করে তোলে? আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?"
আয়াত জন্মান্তরবাদ এর প্রমান বহন করে। মানুষের কুকর্মের জন্যেই তাকে আল্লাহ পশু কূলে পাঠান। অনেকেই এই আয়াতের ব্যখ্যা বলে যে যারা শনিবারের বিধি-নিষেধ পালন না করে মাছ শিকার করেছিল, তাদের আল্লাহ বানর বানিয়ে দিয়েছিলেন, তাই আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেছেন। কিন্তু এটা মিথ্যাচার। আল্লাহ বানরের ঘটনা কুরআনের অন্য জায়গায় আলোলোচনা করেছেন। আর কুরআন ত সর্বকালের জন্য ও সার্বজনীন। সূরা ত্বীনে আল্লাহ সেসব মানুষের কথাই বলেছেন, যাদেরকে পাপ কর্মের ফলে পশু কূলে স্থানান্তর করেছেন।

পর্ব-৩

------------

আল্লাহ সমস্ত আত্মাকে একসাথে তৈরি করে সারিবদ্ধভাবে দাড় করিয়ে জিজ্ঞাস করলেন "আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" (আলাসতু বিররাব্বকিকুম)। উত্তরে আত্মা (রূহ) বলল "না"। অতঃপর তাদের শাস্তি প্রদান করা হল, তারপর আবার পূর্বের ন্যায় জিজ্ঞাস করা হল 'আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" এবারও তারা অস্বীকার করল, এভাবে কয়েকবার করা হলে তাদের শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে দুর্বল করা হল। তারপর আবার যখন তাদের জিজ্ঞাস করা হল 'আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" তখন তারা বলল "হ্যা" (কলু বালা)। আর এই 'হ্যা" সূচক শব্দের স্বীকৃতির প্রদানের প্রমাণ করার জন্যেই প্রানীকূলকে পৃথিবীতে আসতে হল কর্মের মাধ্যমে তা প্রমান করার জন্য। আত্মার সেই জগতকেই 'গঞ্জে মুখ্ফি' বলা হয়। এটাই জন্ম গ্রহনের প্রথম স্ট্যাশন (নয় বাতনের প্রথম পর্যায়)।


আমরা সবাই জন্মের পূর্বে গঞ্জ জাতে গোপন ছিলাম স্রষ্টার সাথে। সেটাই মূলত ব্রহ্মলোক। আবার আমাদের আবার যে কোনো মূল্যে সেখানেই ফিরে যেতে হবে সাধনার দ্বারা। সেখানে পৌঁছাতে পারলে আর আমাদের জন্মমৃত্যু হবে না, তখনই আমাদের জন্মমৃত্যু বারণ হবে, পাবো আমরা জান্নাতুল ফিরদাউস। বৌদ্ধধর্ম মতে যাকে 'নির্বাণ' বলা হয়।


কিন্তু যতদিন আমরা সাধনায় পূর্ন সিদ্ধি লাভ করতে না পারব, ততদিন মৃত্যুর পর ফিরে যেতে হবে 'গঞ্জে মুখফি'তে। এভাবে বার বার আসা যাওয়া করতে হবে আমাদের। যাকে বলা হয় 'অরুজ-নজুল' ভাঙ্গা গড়ার খেলা। অরুজ মানে উপরে যাওয়া আর নুজুল মানে নিন্মে আসা। অরুজ এর নয়টি ধাপ, আবার নুজুলেরও নয়টি ধাপ। নুজুলের ধাপ গুলোকেই 'বাতন' বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি প্রাণীকে পৃথিবীতে জন্ম নিতে নয়টি স্টেশন ভ্রমণ করে আসতে হয়, ইহাকেই 'নয় বাতন' বলা হয়। এই ধাপ গুলোর ব্যপারের আল্লাহ বলেনঃ "তিনি তোমাদের ক্রমে ক্রমে (পর্যায়ক্রমে বা ধাপে ধাপে) সৃষ্টি করেছেন।" (সূরা নূহঃ ৭১ঃ১৪)।


নয় বাতনের নামগুলো উল্লেখ করা হল সবার জ্ঞাত হওয়ার স্বার্থে। নয় বাতন গুলো হলঃ ১.গঞ্জে মুখফি, ২.জামাদাত, ৩.নাবাদাত, ৪.হায়ানাত, ৫.নুতফা, ৬.আলক্বা, ৭.দায়রা, ৮.জনীন, ৯.তেফেলি।


গঞ্জে মুখফি হল বাতনের প্রথম ধাপ। গঞ্জে মুখফির জগতকেই গঞ্জে জাত বলা হয়। আর বাতনের শেষ ধাপ হলো 'তেফেলি'। হোক সে মানুষ কিংবা অন্য কোনো প্রানী, তাকে এই নয়টি ধাপ অতিক্রম করতেই হবে জন্ম নিতে হলে। 

পর্ব-০৪
__________________
পূর্বের পোস্টে 'নয় বাতন' এর নাম উল্লেখ করেছিলাম। এই পোস্টে আভাসমূলক ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করলাম।

১.গঞ্জে মুখফি (গঞ্জে জাত বা আলমে আরওয়া বা রূহের জগত)ঃ সমস্ত প্রাণীর আত্মা এখানেই ছিল, আবার এখানেই চলে যাবে মৃত্যুর পর।
২.জামাদাত (অর্থাৎ ধাতু বা জড়)ঃ এটা দ্বিতীয় স্ট্যাশন। গঞ্জে মুখফি হতে কুশাকারে আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে।
৩.নাবাদাত (অর্থাৎ বৃক্ষ)ঃ কুয়াশাকারে নেমে এসে আত্মা কোনো বৃক্ষের উপর পতিত হয়।
৪.হায়ানাত (অর্থাৎ পশু)ঃ এটা চতুর্থ স্ট্যাশন। সেই বৃক্ষ যে পুরুষ প্রানী ভক্ষন করে, আত্মা তাঁর মস্তকে চলে যায় এবং সুপ্ত হয়ে থাকে। 
৫. নোৎফা (অর্থাৎ মণি বা বীর্য)ঃ আত্মা সুপ্ত হয়ে মস্তকে বীর্যের মধ্যে অবস্থান করে। যদি বৃক্ষ বা বৃক্ষের ফল মানুষ খায় তবে আত্মা মানুষের মস্তকে, আর যদি অন্য কোনো প্রাণীতে ভক্ষ করে, তবে আত্মা সেই প্রানীর মস্তকে চলে যায় (বাবার মস্তকে থাকে)।
৬.আলক্বা (অর্থাৎ জমাট বাধা রক্ত বা ঝুলে থাকা)ঃ তারপর বীর্য বাবার মস্তক থেকে মাতৃ রেহেম বা গর্ভাশয়ে নেমে এসে জমাট বাধা রক্তের গঠন ধারন করে। সূরা আলাকে ২য়য় আয়াতে এই বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।
৭. জনিন (অপরিনত শেকেল)ঃ মানে অপরিনত দেহ। অর্থাৎ তখন দেহের আকার ধারন করে ঠিকই, কিন্তু পূর্ন হয় না।
৮.দায়রা (অর্থাৎ পূর্ন শেকেল)ঃ সবশেষে দেহ পূর্নতা লাভ করে একটি পূর্ন আকৃতি ধারন করে ২৮০ দিনে। মানে ৯ মাস দশ দিনে। অনেকেই দশ মাস দশ দিনের কথা বলে থাকে, সেটা ভুল তথ্য।
৯. তেফেলি ( এটার অর্থ শিশু। এখানে অর্থ হবে তেলেফি কামেল বা পূর্ন বিকাশ)ঃ অবশেষে প্রানী শিশু আকারে জন্ম গ্রহন করে পৃথিবীতে আসে।

এব্যাপারে মহান আল্লাহ্ বলেন,
ﻓَﺈِﻧَّﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺗُﺮَﺍﺏٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻋَﻠَﻘَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻣُﻀْﻐَﺔٍ ﻣُﺨَﻠَّﻘَﺔٍ ﻭَﻏَﻴْﺮِ ﻣُﺨَﻠَّﻘَﺔٍ ﻟِﻨُﺒَﻴِّﻦَ ﻟَﻜُﻢْ ﻭَﻧُﻘِﺮُّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺣَﺎﻡِ ﻣَﺎ ﻧَﺸَﺎﺀُ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺟَﻞٍ ﻣُﺴَﻤًّﻰ ﺛُﻢَّ ﻧُﺨْﺮِﺟُﻜُﻢْ ﻃِﻔْﻼً - ‘
অতঃপর আমরা তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর বীর্য থেকে (নুফতা), জমাট বাঁধা রক্ত থেকে (আলক্বা) , এরপর পূর্ণ আকৃতি (দায়রা) ও অপূর্ণ আকৃতি বিশিষ্ট গোশতপিন্ড থেকে (জনিন), তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর আমরা নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই, এরপর শিশু অবস্থায় বের করি (তেফেলি)। (সূরা হজ্জ ২২/৫)।

এভাবে দুনিয়াতে আসার পর আবার ফিরে যেতে হয় সেই গঞ্জমুখফিতে। এভাবেই চলতে থাকে আমাদের আসা যাওয়ার পালা। কিন্তু এই মার্তৃগর্ভের বা জঠরের যন্ত্রতা অনেক ভয়ানক। স্রষ্টার দয়ার ফলে জন্মের পর আমরা সেই যন্ত্রনাকে ভুলে যাই। এটাকেই গূড় বা কবরের আজাব বলে। মূলত মাতৃগর্ভটাই কবব। এই কবরের আজাব থেকে কারো মুক্তি নেই, এমনকি ওলী-আল্লাহ, গাউস কুতুবদেরও না, অবতাররাও এই যন্ত্রনা ভোগ করে মানব কূলে জন্ম নেন। 

তাই সাধনার দ্বারা জন্ম মৃত্যুকে বারণ করে নির্বান লাভের মাধ্যমে ওলী আল্লাহ, সাধু, মনি-ঋষীগন এই কবরের আযাব থেকে চিরমুক্তি লাভ করিতা স্রষ্টার সাথে মিলিত হন। এই স্তরকেই বাকা বিল্লাহর স্তর বলা হয়।

বাসনা থাকতে জীবের এই আসা যাওয়া বারণ হবে না। সে শত কোটি জনম এভাবেই ভ্রমন করতে থাকবে আর জঠরের যন্ত্রনা ভোগ করবে। জন্মমৃত্যু বারনের উপায় একটাই, সেটা হল বাসনাকে বর্জন করা। বাসনাই হল 'কাম'। কাম শুধু যৌনতাই নয়। আমাদের বাসনা থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে, তবেই আমরা প্রকৃত মুক্তি লাভ করব। যাকে বলা হয় জন্মমৃত্যু বারণ বা নির্বান লাভ।

আমি সংক্ষেপে আভাস দিলাম, আর যতটা খোলাসা করে বলা সম্ভব সেটাও বললাম। বাকীটা নিজ নিজ গুরু কাছ থেকেই জেনে নিবেন। তবে যতটা প্রকাশ করেছি, এতোটুকুই বুঝে নিতে পারলে কম নয়, বাকীটা আপনি চিন্তা করলে বুঝে যাবেন।

বিঃদ্রঃ আসা যাওয়া শুধু মানব কূলেই নয়, পাপ কর্মের কারনে ৮৪ এর ফেরে পরে গিয়ে পশু কূলেও আসতে হতে পারে।