Friday, May 20, 2016

জন্মান্তরবাদ (৭-৮)

পর্ব-০৭
________________
জন্মদিনে মৃত্যুর কথা স্বরন করাই প্রতিটি মানু্ষের মুখ্য কর্ম। জন্ম নিয়ে অমর হওয়ার কর্ম করার জন্যই মানুষের জন্ম। আর অমর হওয়ার কর্মের দ্বারা জন্ম মৃত্যুকে বারণ করে 'নির্বাণ' লাভই হল প্রকৃত মানুষের উদ্দেশ্য। কত শত লক্ষ যোনী ভ্রমনের পর আমরা এই মানব জনম পেয়েছি, তার হিসাব আমাদের কাছে নেই। তাই এই জন্মকেই শেষ জন্ম-মৃত্যু করার লক্ষে আমাদের কর্ম করতে হবে।
জন্ম সেই নেয়, যার পূর্ব জন্মের বাসনা ফুরায় না। মূলত বাসনা থাকতে জীবের আসা-যাওয়া বারণ হবে না। তাই নির্বাণ লাভের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয়টি হল বাসনা পরিত্যাগ করা। পাপ এবং পূন্য কর্মের ফলাফল ভোগ করার জন্যই মানুষের বারবার জন্মগ্রহন করতে হয় (জনম নিলে তার মৃত্যু অনিবার্য)।যাকে জন্মান্তর্বাদ বলা হয়।
বাসনা পূরন করার জন্য আমাকে বারবার নয় বাতন ঘুরে এই পৃথিবীতে আসতে হয়েছে দীর্ঘ্য ৯ মাস ১০ দিন মাতৃগর্ভ নামক কবর বা গুর আযাব ভোগ করে। যাকে যঠরের যন্ত্রনা বলা হয় সনাতন বা হিন্দু ধর্মে। প্রতিটি মানুষকেই গুর আযাব ভোগ করতে হয়, হোক সে ওলী আওলিয়া বা নবী রাসূল বা কোনো অবতার। গুর আযাব (যঠরের যন্ত্রনা) কারো জন্য মাফ নাই।
মানুষের কর্ম ৪ প্রকার (পাঁচ প্রকার)। যথাঃ সঞ্চিত, প্রারদ্ধ, নিত্য, আগামী, (পতিসিদ্ধ)।
‪#‎সঞ্চিত‬ কর্মঃ পূর্ব জন্মের কর্ম।
‪#‎প্রারদ্ধঃ‬ পূর্বের কর্ম এই জন্মে প্রারদ্ধ হয়ে আমাদের সাথে এসেছে। যে কর্মের ফল আমরা ভোগ করছি।
‪#‎নিত্য‬ কর্মঃ যে কর্ম আগামী জন্মের জন্য আমরা এখন যা যাযা করছি।
‪#‎আগামী‬ কর্মঃ নিত্য কর্মই আগামী জন্মে প্রারদ্ধ হয়ে আবার আমাদের সাথে যাবে, সেটাই আগামী কর্ম।
(পতিসিদ্ধঃ না জানলেও চলবে)
তাই আমাদের সবার উচিত সঞ্চিত কর্ম প্রারদ্ধ হয়ে আমাদের যে দুঃখ যাতনা দিচ্ছে, তা যেন আগামী জন্মে আর না ঘটে সেই জন্য নিত্য কর্মকে ভাল করতে হবে, যেন আগামী টা সুন্দর হয়।
আজকে আমি ২১ বছর বয়সে পদার্পণ করলাম। আর যারা আমার জন্মদিনে আমাকে wish করেছেন, তাদেরকে জানাই অন্তরের অন্তর স্থল থেকে শুভেচ্ছা ও ভালবাসা। আর যারা জানান নাই, তাদের জন্যও রইলো শুভকামনা। আপনাদের আগামী দিন গুলো সুখের হোক, সেই কামনা রইলো।
গতবার সম্ভাবত ২০০ জনের উপরে Wish করেছিল। কিন্তু এইবার আমি ইচ্ছা করেই আমার জন্ম তারিখ হাইড করে রাখছিলাম যাতে কেউ জানতে না পারে। সত্যি বলতে আমার লাইফে এমন কেউ নাই যেব্যক্তি আমার জন্মদিন মনে রেখে আমাকে উইশ করবে। তাই হাইড করে রাখছিলাম ফেইসবুক থেকে। কিন্তু এইবার Md Anwar Hossain ভাই আমাকে উইশ করছে আমার জন্ম তারিখ মনে রেখে। তারপর সেটা দেখে অনেকেই জানতে পারছে আজ আমার জন্মদিন। । এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের। কারন আমি এইরুপ পাওয়ার যোগ্য নই। তবুও আপনাদের মহৎ হৃদয়ের ভালবাসার কাছে আমি চির ঋণী। কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আসা ছিল না। তবে কিছু প্রিয় মানুষের অনুপস্থিতিতে একটু খালি খালি লাগতেছে।
তবে সত্যিই Md Anwar Hossain ভাইয়ের ভালবাসার কাছে চির ঋণী। জন্মদিন হাইড করে রাখা সার্থক আমার শুধু আপনার জন্য ভাই। আর তাহিয়া (মেঘ কন্যা) দোস্ত তর কাছেও কৃতজ্ঞ, অন্ততপক্ষে দুইজন মানুষ পেলাম যারা আমার জন্ম তারিখ ডাইরীতে লিখে রাখছে মনে রাখার জন্য। Rezwoan Ahmed ভাই তোমার গীটারের মিউজিক টা অসাধারণ ছিল, Thank u so much bro, Sumaiya Mumtaha তদের দুইজনের যৌথ উইশ সত্যিই অসম্ভব ভাল লাগছে, অসংখ্য ধন্যবাদ তোদের দুইজনকে।
আমি কখনো আমার জন্মদিনে পার্টি করি নাই। ভবিষ্যতে করবো বলেও মনে হয় না। আমি নিজের জন্য এরূপ অনুষ্ঠান পছন্দ করি না। তবে অন্যদের বার্থডে পার্টি আমার খুব ভাল লাগে। আমি অন্যদের সাহায্য ও উৎসাহও দিয়ে থাকি বটে।
দাঁড়ান, দাঁড়ান,, আরেক টা কথা,, নিচের ছবিটা আমার ছোট বেলার। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ২১ দিন। আমি সেই রাহাত।
 পর্ব-০৮
__________________
যীশু খ্রিস্ট বলেছেন, "Every man is a born sinner" অর্থাৎ প্রতিটি মানুষই জন্ম থেকেই পাপী। কিন্তু একটি শিশু জন্মের আগে পাপের বুঝতই বা কি! আর পাপ করলোই বা কখন! নিঃসন্দেহে বাইবেলের এই লাইনটি জন্মান্তরবাদের ইঙ্গিত করে, কিন্তু মুসলিমদের মত খ্রীষ্টানরাও জন্মান্তরবাদ মানতে চায় না। কর্মবাদ ও কর্মের প্রকার গুলো বুঝলেই এই মস্যার সূক্ষ্ম সমাধান পাওয়া যাবে। ৭নং পর্বে কর্মের পপ্রকার উউল্লেখ ককরেছিলাম। আজ আর কর্মের প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

কর্ম প্রধানত চার প্রকার, মোট পাঁচ প্রকার। চার প্রকার কর্ম হলোঃ ১.সঞ্চিত ২.প্রারব্ধ ৩.নিত্য ৪.আগামী। আর পঞ্চম প্রকারের নাম হলো প্রতিষিদ্ধ। 

১.সঞ্চিত কর্মঃ পূর্বের জন্মে মানুষ যে কর্ম করে তাকেই সঞ্চিত কর্ম বলে। অর্থাৎ বর্তমান জন্মে মানুষ সঞ্চিত কর্মেরই ফল ভোগ করে। সঞ্চিত কর্মের উপরই নির্ভর করে মানুষ কেমন স্তরে জন্মগ্রহন করবে। যদি ভাল কর্ম করে তবে ভাল স্তরে, আর যদি খারাপ কর্ম করে তবে খারাপ স্তরে জন্মগ্রহন করবে। পূর্বে জন্মে যে অনেক দান করবে সে ধনী পিতা-মাতার ঘরে জন্ম নিবে হবে, যে কৃপণতা করবে সে দরিদ্র‍্য পিতা-মাতার ঘরে জন্ম গ্রহন করবে। এখানে স্তর রয়েছে, কেউ রাজার ঘরে, কেউ জমিদারের ঘরে, কেউ উচ্চবিত্তের ঘরে, আবার কেউ একদম মিসকীন বা হত দরিদ্রের ঘরে, কেউ বা সামান্য দরিদ্র‍্যের ঘরে, কেউ ভিক্ষারীর ঘরে কেউ বা মধ্যবিত্তের ঘরে জন্মগ্রহন করে। কেউ বা আবার মানব কূল হারিয়ে পশু কূলে জন্মগ্রহন ককরে, যাকে বলা হয় ৮৪ এর ফের।তাই প্রতিটি মানুষই জন্ম থেকেই পাপী, যে ব্যাপারে বাইবেলের উক্তটি তুলে ধরেছিলাম উপরে।

২.প্রারব্ধ কর্মঃ সঞ্চিত কর্মকেই প্রাদব্ধ কর্ম বলা হয় বর্তমান জন্মে। অর্থাৎ আমরা যে কর্মেরফল ভোগ করে তাকেই প্রারব্ধ কর্ম বলে। অর্থাৎ সঞ্চিত কর্মই বর্তমান জন্মে প্রারব্ধ নাম ধারন করে। প্রারব্ধের ভোগ ভুগতে হবেই সে যত বড় মহামানব হোক। কর্ম কখনো পিছু ছাড়বে না। কুরআনের ভাষায় 'যা করবা তার বদলা পাইবা, এক সরিষার দানা পরিমান ছাড় দেওয়া হবে না"।

৩.নিত্য কর্মঃ আমরা বর্তমান জন্মে যেসব কাজ করতেছি সেটাই নিত্য কর্ম। আগামী জন্মে এই কর্মের নাম হয়ে যাবে সঞ্চিত কর্ম ও প্রারব্ধ কর্ম।

৪.আগামী কর্মঃ নিত্য কর্ম যে আমাদের সাথী হবে, যা আগামী জন্মে আমাদের ভোগ করতে হবে, তার নামই আগামী কর্ম। অর্থাৎ আমরা যা করছি বর্তমান জন্মে, তার মধ্যে যা গত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন, সেটাকেই এই জন্মে আগামী কর্ম বলা হয়। এই আগামী কর্মই আগামী জন্মে সঞ্চিত কর্ম নাম ধারন করবে।

৫.প্রতিষিদ্ধ কর্মঃ না বুঝলেই চলবে এটা। একটু জটিল। সাধরনত এটা আলোচনায় আসে না। আলোচনা করে পূর্বের গুলো গুলিয়ে যেতেন পারেন।

সুতরাং আমাদের সঞ্চিত কর্ম যা কিনা প্রারব্ধ হয়ে এসেছে আমাদের সাথে, তা আমাদের ভোগ করতেই হবে। তাই আমাদের উচিত নিত্য কর্মটাকে সুন্দর করা, যাতে আগামী কর্মটা ভাল হয়।

No comments: